আন্তর্জাতিক প্রতিবেদকঃ ”পাঠাও’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ নিউইয়র্কে নিজ বাসায় খুন হয়েছেন। মোবাইল অ্যাপভিত্তিক রাইড সেবাদাতা পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফাহিম সালেহ যুক্তরাষ্ট্রে নিজের বাসায় খুন হয়েছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটনের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তার খণ্ডবিখণ্ড লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিউইয়র্ক পুলিশ জানায়, বৈদ্যুতিক করাত দিয়ে ফাহিমের গলা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে কয়েক টুকরা করা হয়েছে। খণ্ডিত অংশগুলো ব্যাগে ভরা ছিল। ৩৩ বছর বয়সী ফাহিম চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের হরিসপুরের আইবিএমের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সালেহ আহমেদের ছেলে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে তিনি নিউইয়র্ক সিটির পাশে পোকিস্পিতে মা-বাবার সঙ্গে ছিলেন। কয়েক দিন আগে তিনি নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ওঠেন। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছর সাড়ে ২২ লাখ ডলারে ম্যানহাটানের লোয়ার ইস্ট সাইডে সাফোক স্ট্রিটের ইস্ট হিউস্টন স্ট্রিটের ওপর কন্ডোটি (বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট) কেনেন ফাহিম। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, আগের দিন থেকে ফাহিমের কোনো সন্ধান না পেয়ে তার ছোট বোন উদ্বিগ্ন হয়ে ভবনটির সপ্তম তলায় ফাহিমের অ্যাপার্টমেন্টে ছুটে যান। পরে তার ফোন পেয়ে সেখানে পুলিশ যায়। নিউইয়র্ক পুলিশের মুখপাত্র সার্জেন্ট কার্লোস নিয়েভেস বলেন, ‘ফাহিমের শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন মাথা, বুক, দুই হাত ও দুই পা পেয়েছি কক্ষের ভেতরেই।’ অ্যাপার্টমেন্টে ঢোকার মুখের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ বলছে, সোমবার বিকেলে ফাহিম এলিভেটর দিয়ে ওই ভবনে ঢোকার সময় তার পেছনেই একটি স্যুটকেস নিয়ে এক লোক ঢুকছিলেন। স্যুট পরা ওই লোকের মাথায় টুপি, মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস ছিল। ফাহিম তার বাসায় ঢোকার সময় আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন; পরে তাকে নিস্তেজ করা হয়ে থাকতে পারে। ফাহিমের খন্ডিত দেহ ভরা ছিল প্লাস্টিকের ব্যাগে, পাশে পড়ে থাকা করাতে রক্ত ছিল না। তার মানে, আলামত গোপনের চেষ্টা ছিল ঘাতকদের। ফাহিম সালেহর জন্ম ১৯৮৬ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের বেন্টলি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফরমেশন সিস্টেম নিয়ে পড়াশোনা করতেন ফাহিম। নাইজেরিয়া আর কলম্বিয়াতে তার দুটি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ কোম্পানি রয়েছে। পেশায় ওয়েবসাইট ডেভেলপার ফাহিম অ্যাডভেঞ্চার ক্যাপিটাল গ্লোবাল নামক একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানেরও উদ্যোক্তা ছিলেন। মাত্র ৩৩ বছর বয়সে ফাহিম ৫০ কোটি ডলারের মালিক হয়েছিলেন।